সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫

মান্দায় ছাত্রীকে বাল্যবিয়ে করে ভাইরাল প্রধান শিক্ষককে বাঁচানোর পাঁয়তারা


মহসিন রেজা :

নিজ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীকে বাল্যবিয়ে করে ভাইরাল হওয়া নওগাঁর মান্দা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনকে বাঁচানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বিষয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের কথা বললেও তা অস্বীকার করছেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

উপজেলা প্রশাসনের পদস্থ দুই কর্মকর্তার দু’ধনের বক্তব্য নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনকে এসব দায় থেকে বাঁচানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে। অবিলম্বে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

বাল্যবিয়ের শিকার ওই ছাত্রীর নাম দোলা আক্তার। মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে দোলা আক্তার এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। জন্মসনদ অনুযায়ী তার বয়স হচ্ছে ১৬ বছর ৬ মাস। গত ২৬ মার্চ তাকে বিয়ে করে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তোলেন একই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন। তিনি হাজীগোবিন্দপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আফছার আলী মণ্ডলের ছেলে।    

এদিকে ছাত্রী দোলা আক্তারকে বাল্যবিয়ে করার সংবাদ প্রকাশ হয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকেরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনের অপসারণসহ বিচার দাবি করেন। ইউএনওর কাছে অভিযোগও দেওয়া হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা ময়েজ উদ্দিন বলেন, সাড়ে ১৬ বছর বয়সী ছাত্রীকে বাল্যবিয়ে করেছেন প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন। ঘটনার ১১দিন পেরিয়ে গেলেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। প্রধান শিক্ষক নিজেই যদি বাল্যবিয়ে করেন তাহলে সমাজ থেকে বাল্যবিয়ে দুর হবে কীভাবে।

জানতে চাইলে বাশিস নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম সোরয়ার স্বপন বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা বালিকা বিদ্যালয়ের ঘটনাটি নিয়ে আমরা শিক্ষক সমাজ বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে রয়েছি।’

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ আলম মিয়া বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ শাহ আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিটিকে।

তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ শাহ আলম বলেন, এখন পর্যন্ত এ ধরণের কোনো চিঠি পাইনি। পেলে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।



শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: